মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে আজ মঙ্গলবারও (৭ অক্টোবর) মিশরের শার্ম আল-শেখ শহরে পরোক্ষ আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
ফিলিস্তিনি ও মিশরীয় কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, এই বৈঠকে মূলত এমন একটি বাস্তবতা তৈরির দিকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে যাতে করে বন্দি বিনিময়ের প্রক্রিয়া শুরু করা যায় — অর্থাৎ, সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে বিনিময়ে বহু ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তির শর্ত থাকবে। খবর বিবিসির।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী গত ৪ অক্টোবর বলেছেন, তিনি “আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই” জিম্মি মুক্তির ঘোষণা দিতে চান।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “আমরা একটি চুক্তির খুব কাছাকাছি আছি। এটি দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”
হামাস জানিয়েছে, তারা শান্তি পরিকল্পনার কিছু অংশে সম্মতি দিয়েছে, তবে নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজায় তাদের ভবিষ্যৎ ভূমিকা নিয়ে এখনও স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেয়নি।
রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ৬ অক্টোবর রাতের বৈঠক শেষ হয়েছে ইতিবাচক পরিবেশে এবং মঙ্গলবার নতুন করে বৈঠক হবে।
এই আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ, ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার, কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি এবং মিশরীয় কর্মকর্তারা।
২০ দফা এই শান্তি পরিকল্পনায় যুদ্ধবিরতি, জিম্মি মুক্তি এবং তাৎক্ষণিকভাবে গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, হামাস গাজা শাসন করবে না এবং ভবিষ্যতে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সম্ভাবনাও রাখা হয়েছে।
তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি “ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিরোধী” এবং তা চুক্তিতে স্পষ্টভাবে লেখা নেই।
হামাস ৩ অক্টোবর এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাবে রাজি “যদি প্রস্তাবিত শর্তগুলো পূরণ হয়” এবং গাজার প্রশাসন একটি “স্বাধীন প্রযুক্তিবিদ কমিটির হাতে” তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, “ট্রাম্পের পরিকল্পনা এই দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতের অবসানের একটি সুযোগ এনে দিয়েছে।”
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও মার্কিন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, “আমরা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আনতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টার পাশে আছি।”
তবে গাজায় এখনও ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। হামাস প্রশাসন জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২১ জন নিহত এবং ৯৬ জন আহত হয়েছেন। গাজা সিটির বহু এলাকায় এখনও মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
গাজার দক্ষিণে একটি ‘মানবিক এলাকা’ নির্ধারণ করা হলেও, বিপুলসংখ্যক মানুষ এখনও শহরেই আটকা পড়েছে।
দুই পক্ষের দাবি যাচাই করা কঠিন, কারণ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে গাজায় প্রবেশে ইসরায়েল নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।