ঢাকা ০৩:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ৩০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একবার রোপণে বছরে তিনবার পাওয়া যেতে পারে পেরিনিয়াল রাইস!

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০১:০৪:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫
  • ২১ বার পড়া হয়েছে

চীনের সহায়তায় ২০১৯ সালে দেশে শুরু হয় বহুবর্ষজীবী ধানের গবেষণা। উৎপাদন পর্যায়ে নানা চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে বর্তমানে এই জাত নিয়ে নতুন ভাবনায় ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) গবেষকরা।

নতুন করে চারা রোপণ ছাড়াই বহুবার ধান উৎপাদন সম্ভব এ জাতে। একবার রোপণ করলে ধারাবাহিকভাবে পাঁচ বছর পর্যন্ত বছরে দুবার ফসল সংগ্রহ করা যাবে। মাঠপর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে এই বহুবর্ষজীবী ধানের উৎপাদন চলছে গাজীপুর, ফরিদপুর, রাজশাহী ও দিনাজপুরে।

বহুবর্ষজীবী ধান চাষের ক্ষেত্রে প্রথম মৌসুমের ধাপগুলো সাধারণ ধান চাষের মতোই। তবে দ্বিতীয় মৌসুম থেকে ধানের চারা মাটির নিচে থাকা কাণ্ড থেকেই জন্মায়। কৃষকরা বলছেন, ১০৫ দিনে পরিপূর্ণ ধানের এই জাত পাল্লা দিচ্ছে স্থানীয় পর্যায়ের অন্যান্য ধানের সঙ্গে। বর্তমানে কাঠাপ্রতি এক মণের বেশি উৎপাদন হচ্ছে এই খাদ্যশস্য।

আরও পড়ুন: আমনের ক্ষেতে মাজরা পোকা-ব্লাস্টের প্রকোপ, ফলন নিয়ে শঙ্কায় রংপুরের চাষিরা

সময় সংবাদকে এ ধান চাষের সঙ্গে যুক্ত এক কৃষক বলেন, ‘সার, বীজ, পানি সবকিছু মিলিয়ে বিঘাপ্রতি ১০ হাজার টাকা খরচ আছে। একবার যেমন ধান কেটেছি, ১০ মণ ৩০ কেজি ধান হয়েছে আমার। ওইটা ৮ কাঠার মতো জায়গাতে। আমি একবার লাগিয়েছে , ওই ধানটা কেটে নিয়েছি। এখন গোড়া থেকে আবার ধান হয়ে গেল।’

অন্য কৃষক বলেন, ‘১০ সেন্টিমিটার রেখে দিয়ে আমরা তার ওপর থেকে কাটি। এ ধানের জন্য আমাদের উচ্চ ভূমি প্রয়োজন।’

গবেষকরা জানান, বহুবর্ষজীবী ধান কেবল উৎপাদন বাড়াবে না, বরং শ্রম ব্যয় কমাবে ৫৮ শতাংশ এবং উৎপাদন খরচ সাশ্রয় করবে ৪৯ শতাংশ।

এ বিষয়ে আইইউবিএট’র কৃষি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারজানা সুলতানা বলেন, ‘বড় একটা খরচ কিন্তু ধানের চারা লাগানো, জমি তৈরি এবং পরবর্তীতে ফসল সংগ্রহে যায়। বড় খরচ ৫০ শতাংশ আমরা এখানেই কমিয়ে দিতে পারছি। এটা অনেক সম্ভাবনাময় খাত।’

আরও পড়ুন: মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদে ব্যস্ত রাজবাড়ীর চাষিরা, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে সারের দাম

আইইউবিএটি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুর রব জানিয়েছেন, উৎপাদন সময়সীমা এবং পরিমাণ বিবেচনায় বছরে তিনবার কীভাবে এই ধান উৎপন্ন করা যায়, এখন চলছে সেই পরীক্ষা।

তিনি বলেন, ‘আরও কয়েকটি এলাকায় পরীক্ষামূলক চাষাবাদ করব। এ এলাকায়গুলোতে তো ভালো চাষ হয়েছে। ও রকম এলাকাগুলোতে হবে কিনা, সেটা দেখব। লক্ষ্য করলাম, ১০৫ দিনে আমাদের পুরো উৎপাদন প্রক্রিয়াটা হয়েছে। ৩৬৫ দিনে এক বছর। তাহলে এক বছরে তিনবার করা যায়। এখন বছরে কোন সময়ে কোনটা শুরু করব, এটা ঠিক করতে হবে।’

চীনের ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফেঞ্জাই হু উদ্ভাবিত বহুবর্ষজীবী ধান নিয়ে দেশে উচ্চতর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন আইইউবিএটি’র গবেষকরা।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।

‘ধর্মের নামে রাজনীতির করা একটি দলের হাতে নারীরা নির্যাতিত হচ্ছেন’

একবার রোপণে বছরে তিনবার পাওয়া যেতে পারে পেরিনিয়াল রাইস!

আপডেট সময় ০১:০৪:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫

চীনের সহায়তায় ২০১৯ সালে দেশে শুরু হয় বহুবর্ষজীবী ধানের গবেষণা। উৎপাদন পর্যায়ে নানা চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে বর্তমানে এই জাত নিয়ে নতুন ভাবনায় ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) গবেষকরা।

নতুন করে চারা রোপণ ছাড়াই বহুবার ধান উৎপাদন সম্ভব এ জাতে। একবার রোপণ করলে ধারাবাহিকভাবে পাঁচ বছর পর্যন্ত বছরে দুবার ফসল সংগ্রহ করা যাবে। মাঠপর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে এই বহুবর্ষজীবী ধানের উৎপাদন চলছে গাজীপুর, ফরিদপুর, রাজশাহী ও দিনাজপুরে।

বহুবর্ষজীবী ধান চাষের ক্ষেত্রে প্রথম মৌসুমের ধাপগুলো সাধারণ ধান চাষের মতোই। তবে দ্বিতীয় মৌসুম থেকে ধানের চারা মাটির নিচে থাকা কাণ্ড থেকেই জন্মায়। কৃষকরা বলছেন, ১০৫ দিনে পরিপূর্ণ ধানের এই জাত পাল্লা দিচ্ছে স্থানীয় পর্যায়ের অন্যান্য ধানের সঙ্গে। বর্তমানে কাঠাপ্রতি এক মণের বেশি উৎপাদন হচ্ছে এই খাদ্যশস্য।

আরও পড়ুন: আমনের ক্ষেতে মাজরা পোকা-ব্লাস্টের প্রকোপ, ফলন নিয়ে শঙ্কায় রংপুরের চাষিরা

সময় সংবাদকে এ ধান চাষের সঙ্গে যুক্ত এক কৃষক বলেন, ‘সার, বীজ, পানি সবকিছু মিলিয়ে বিঘাপ্রতি ১০ হাজার টাকা খরচ আছে। একবার যেমন ধান কেটেছি, ১০ মণ ৩০ কেজি ধান হয়েছে আমার। ওইটা ৮ কাঠার মতো জায়গাতে। আমি একবার লাগিয়েছে , ওই ধানটা কেটে নিয়েছি। এখন গোড়া থেকে আবার ধান হয়ে গেল।’

অন্য কৃষক বলেন, ‘১০ সেন্টিমিটার রেখে দিয়ে আমরা তার ওপর থেকে কাটি। এ ধানের জন্য আমাদের উচ্চ ভূমি প্রয়োজন।’

গবেষকরা জানান, বহুবর্ষজীবী ধান কেবল উৎপাদন বাড়াবে না, বরং শ্রম ব্যয় কমাবে ৫৮ শতাংশ এবং উৎপাদন খরচ সাশ্রয় করবে ৪৯ শতাংশ।

এ বিষয়ে আইইউবিএট’র কৃষি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারজানা সুলতানা বলেন, ‘বড় একটা খরচ কিন্তু ধানের চারা লাগানো, জমি তৈরি এবং পরবর্তীতে ফসল সংগ্রহে যায়। বড় খরচ ৫০ শতাংশ আমরা এখানেই কমিয়ে দিতে পারছি। এটা অনেক সম্ভাবনাময় খাত।’

আরও পড়ুন: মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদে ব্যস্ত রাজবাড়ীর চাষিরা, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে সারের দাম

আইইউবিএটি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুর রব জানিয়েছেন, উৎপাদন সময়সীমা এবং পরিমাণ বিবেচনায় বছরে তিনবার কীভাবে এই ধান উৎপন্ন করা যায়, এখন চলছে সেই পরীক্ষা।

তিনি বলেন, ‘আরও কয়েকটি এলাকায় পরীক্ষামূলক চাষাবাদ করব। এ এলাকায়গুলোতে তো ভালো চাষ হয়েছে। ও রকম এলাকাগুলোতে হবে কিনা, সেটা দেখব। লক্ষ্য করলাম, ১০৫ দিনে আমাদের পুরো উৎপাদন প্রক্রিয়াটা হয়েছে। ৩৬৫ দিনে এক বছর। তাহলে এক বছরে তিনবার করা যায়। এখন বছরে কোন সময়ে কোনটা শুরু করব, এটা ঠিক করতে হবে।’

চীনের ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফেঞ্জাই হু উদ্ভাবিত বহুবর্ষজীবী ধান নিয়ে দেশে উচ্চতর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন আইইউবিএটি’র গবেষকরা।


Notice: ob_end_flush(): Failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home/somokontho/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471