ঢাকা ০৫:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রাম থেকে অপহৃত কাস্টমস কর্মকর্তার মরদেহ মিলল ফেনীতে

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০১:৩৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
  • ২৪ বার পড়া হয়েছে

ফেনীর ছাগলনাইয়ায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের পর পকেটে পাওয়া একটি ব্যাংক চেকের সূত্র ধরে বেরিয়ে আসে হারিয়ে যাওয়া এক জীবনের করুণ পরিসমাপ্তি। শনাক্ত হয় ছয় বছর আগে চট্টগ্রাম থেকে অপহৃত কাস্টমস কর্মকর্তা আবদুল আহাদের মরদেহ।

পরিবারের দাবি, অপহরণের পর তখন মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা দেওয়ার পরও তাকে ফেরত পায়নি তারা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকের সামনে অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে অজ্ঞান অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। চিকিৎসক বিভিন্ন পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের ওসি মো. আবুল বাশারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তাৎক্ষণিক হাসপাতালে যায়। সেখানে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে তার সঙ্গে থাকা কাগজপত্র দেখার সময় উত্তরা ব্যাংক ফেনীর বিরিঞ্চি শাখার একটি চেক পায় পুলিশ। চেকে হিসাবের নাম আবদুল আহাদ উল্লেখ রয়েছে।

পরে পুলিশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে হিসাব নম্বর জানালে তারা আবদুল আহাদের পরিচয় নিশ্চিত করেন। এদিকে নিহতের পরিচয় শনাক্তের পর স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। ফেনীতে ব্যাংক হিসাব কী করে খুললেন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। পরে দিনভর নানা তথ্য যাচাই করলে বেরিয়ে আসে তার ফেনীতে আসার পেছনের গল্প।

নিহতের ছোট বোন নাঈমা নাসরিন মনি বলেন, আমার ভাই একসময় সিলেট ব্রিটানিকা উইমেন্স কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। পরবর্তীতে সিলেট বিমানবন্দরে কাস্টমসের অডিটর পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে চাকরি করেন। এরপর একই পদে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও পরে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে কর্তব্যরত অবস্থায় ২০১৯ সালের ১ মে হঠাৎ তার মুঠোফোন বন্ধ পাই। পরে একটি নম্বর থেকে কল দিয়ে আমাদের জানানো হয় আবদুল আহাদকে অপহরণ করা হয়েছে। বিকাশে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ পাঠালে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। অপহরণকারীদের দাবি অনুযায়ী তখন আমরা দুই লাখ টাকা পাঠিয়েছি। এরপর তাদের নম্বরে যোগাযোগ করলেও বন্ধ পাই। নাঈমা নাসরিন মনি বলেন, অন্যদিকে আমার ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাইনি। পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করার ছয় বছর পরও ভাইকে আর পাইনি। বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জানতে পারি ফেনীর ছাগলনাইয়ায় আমার ভাইয়ের মরদেহ পাওয়া গেছে।

ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের ওসি মো. আবুল বাশার কালবেলাকে বলেন, ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নিহত আবদুল আহাদ মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার হাজীপুর ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের ইমানী মিয়ার ছেলে বলে জানা গেছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।

হামজা চৌধুরীকে ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ ঘোষণা রবি আজিয়াটা’র

চট্টগ্রাম থেকে অপহৃত কাস্টমস কর্মকর্তার মরদেহ মিলল ফেনীতে

আপডেট সময় ০১:৩৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

ফেনীর ছাগলনাইয়ায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের পর পকেটে পাওয়া একটি ব্যাংক চেকের সূত্র ধরে বেরিয়ে আসে হারিয়ে যাওয়া এক জীবনের করুণ পরিসমাপ্তি। শনাক্ত হয় ছয় বছর আগে চট্টগ্রাম থেকে অপহৃত কাস্টমস কর্মকর্তা আবদুল আহাদের মরদেহ।

পরিবারের দাবি, অপহরণের পর তখন মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা দেওয়ার পরও তাকে ফেরত পায়নি তারা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকের সামনে অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে অজ্ঞান অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। চিকিৎসক বিভিন্ন পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের ওসি মো. আবুল বাশারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তাৎক্ষণিক হাসপাতালে যায়। সেখানে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে তার সঙ্গে থাকা কাগজপত্র দেখার সময় উত্তরা ব্যাংক ফেনীর বিরিঞ্চি শাখার একটি চেক পায় পুলিশ। চেকে হিসাবের নাম আবদুল আহাদ উল্লেখ রয়েছে।

পরে পুলিশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে হিসাব নম্বর জানালে তারা আবদুল আহাদের পরিচয় নিশ্চিত করেন। এদিকে নিহতের পরিচয় শনাক্তের পর স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। ফেনীতে ব্যাংক হিসাব কী করে খুললেন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। পরে দিনভর নানা তথ্য যাচাই করলে বেরিয়ে আসে তার ফেনীতে আসার পেছনের গল্প।

নিহতের ছোট বোন নাঈমা নাসরিন মনি বলেন, আমার ভাই একসময় সিলেট ব্রিটানিকা উইমেন্স কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। পরবর্তীতে সিলেট বিমানবন্দরে কাস্টমসের অডিটর পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে চাকরি করেন। এরপর একই পদে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও পরে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে কর্তব্যরত অবস্থায় ২০১৯ সালের ১ মে হঠাৎ তার মুঠোফোন বন্ধ পাই। পরে একটি নম্বর থেকে কল দিয়ে আমাদের জানানো হয় আবদুল আহাদকে অপহরণ করা হয়েছে। বিকাশে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ পাঠালে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। অপহরণকারীদের দাবি অনুযায়ী তখন আমরা দুই লাখ টাকা পাঠিয়েছি। এরপর তাদের নম্বরে যোগাযোগ করলেও বন্ধ পাই। নাঈমা নাসরিন মনি বলেন, অন্যদিকে আমার ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাইনি। পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করার ছয় বছর পরও ভাইকে আর পাইনি। বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জানতে পারি ফেনীর ছাগলনাইয়ায় আমার ভাইয়ের মরদেহ পাওয়া গেছে।

ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের ওসি মো. আবুল বাশার কালবেলাকে বলেন, ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নিহত আবদুল আহাদ মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার হাজীপুর ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের ইমানী মিয়ার ছেলে বলে জানা গেছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।


Notice: ob_end_flush(): Failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home/somokontho/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471