ঢাকা ০৩:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ৩০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সন্তান ধারণে সমস্যার সমাধান মিলবে খাবারেই

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:৪৮:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
  • ২৫ বার পড়া হয়েছে

আজকের ব্যস্ত ও চাপপূর্ণ জীবনে অনেক দম্পতি সন্তান ধারণে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। কেউ দেরিতে গর্ভধারণ করছেন, কেউবা দীর্ঘ সময় চেষ্টার পরও ব্যর্থ হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি শুধু ভাগ্যের বিষয় নয় খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপন ও মানসিক চাপও এর বড় কারণ।

তবে আশার কথা, প্রকৃতিতেই আছে এমন অনেক খাবার যা নারী ও পুরুষ উভয়েরই উর্বরতা বা ফার্টিলিটি বাড়াতে সহায়তা করে। সঠিক পুষ্টি গ্রহণ হরমোনের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে, পাশাপাশি ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর গুণগত মানও উন্নত করে।

ফার্টিলিটি বাড়ায় এমন ১০টি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান

. ভিটামিন ডি: যৌন হরমোন তৈরিতে সহায়তা করে ও হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে।
. উৎস: ডিম, চর্বিযুক্ত মাছ (স্যামন, টুনা), দুধজাত খাবার, কড লিভার তেল, রোদ।

. ভিটামিন ই: শুক্রাণুর গুণমান ও গতিশীলতা উন্নত করে, ডিএনএ রক্ষা করে।
. উৎস: সূর্যমুখী বীজ, বাদাম, জলপাই তেল, পালং শাক, পেঁপে।

. ভিটামিন সি: হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে, ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর স্বাস্থ্য উন্নত করে, গর্ভপাতের ঝুঁকি কমায়।
. উৎস: আমলকী, পেয়ারা, লেবু জাতীয় ফল, ব্রোকলি, টমেটো।

. লাইপোইক অ্যাসিড: ডিম্বাশয় ও শুক্রাণু রক্ষা করে।
. উৎস: আলু, পালং শাক, লাল মাংস।

. ভিটামিন বি৬: হরমোন নিয়ন্ত্রণ ও রক্তে শর্করার ভারসাম্য রক্ষা করে।
. উৎস: কলা, টুনা, লিভার, স্যামন, পালং শাক, ব্রোকলি।

. ভিটামিন বি১২: জরায়ুর আস্তরণ মজবুত করে, শুক্রাণু উন্নত করে, গর্ভপাতের সম্ভাবনা হ্রাস করে।
. উৎস: ঝিনুক, লিভার, মাছ, ডিম, পনির।

. ফলিক অ্যাসিড: ভ্রূণের সঠিক গঠন নিশ্চিত করে ও জন্মগত ত্রুটি রোধ করে।
. উৎস: শাকসবজি, ডাল, তিল, তিসি ও সূর্যমুখী বীজ।

. সেলেনিয়াম: ডিম্বাণু ও শুক্রাণুকে ফ্রি র‍্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে।
. উৎস: মাছ, চিংড়ি, ব্রাজিল নাট, মাশরুম, টার্কি।

. জিঙ্ক: হরমোন ভারসাম্য বজায় রেখে প্রজনন ক্ষমতা বাড়ায়।
. উৎস: কলিজা, ঝিনুক, কুমড়োর বীজ, তিল, দই।

. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: জরায়ুর রক্তপ্রবাহ বাড়ায় ও হরমোন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
. উৎস: চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্স সিড, আখরোট, সামুদ্রিক মাছ (স্যামন, সার্ডিন)।

আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাবার

. সঠিক খাদ্য পরিকল্পনায় রাখতে পারেন—
. প্রোটিন: ডিম, মাছ, ডাল, মাংস
. কার্বোহাইড্রেট: ব্রাউন রাইস, ওটস, আলু
. ফাইবার: শাকসবজি, ফল, বাদাম
. হেলদি ফ্যাট: অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, বাদামের তেল

কিছু জরুরি পরামর্শ

. খাদ্য শুধু শরীর নয়, মন ও হরমোনের ভারসাম্যও নিয়ন্ত্রণ করে।
. দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও ফল না এলে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।
. ধূমপান, অতিরিক্ত চিনি ও ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন।

সন্তান ধারণ কোনো একদিনের বিষয় নয় এটি একটি ধীর ও সচেতন প্রস্তুতির অংশ। আর সেই প্রস্তুতির ভিত্তি তৈরি হয় সঠিক খাবার থেকেই। প্রতিদিনের ছোট পরিবর্তন একদিন আপনাকে বড় সুখবর দিতে পারে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।

‘ধর্মের নামে রাজনীতির করা একটি দলের হাতে নারীরা নির্যাতিত হচ্ছেন’

সন্তান ধারণে সমস্যার সমাধান মিলবে খাবারেই

আপডেট সময় ০৯:৪৮:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

আজকের ব্যস্ত ও চাপপূর্ণ জীবনে অনেক দম্পতি সন্তান ধারণে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। কেউ দেরিতে গর্ভধারণ করছেন, কেউবা দীর্ঘ সময় চেষ্টার পরও ব্যর্থ হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি শুধু ভাগ্যের বিষয় নয় খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপন ও মানসিক চাপও এর বড় কারণ।

তবে আশার কথা, প্রকৃতিতেই আছে এমন অনেক খাবার যা নারী ও পুরুষ উভয়েরই উর্বরতা বা ফার্টিলিটি বাড়াতে সহায়তা করে। সঠিক পুষ্টি গ্রহণ হরমোনের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে, পাশাপাশি ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর গুণগত মানও উন্নত করে।

ফার্টিলিটি বাড়ায় এমন ১০টি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান

. ভিটামিন ডি: যৌন হরমোন তৈরিতে সহায়তা করে ও হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে।
. উৎস: ডিম, চর্বিযুক্ত মাছ (স্যামন, টুনা), দুধজাত খাবার, কড লিভার তেল, রোদ।

. ভিটামিন ই: শুক্রাণুর গুণমান ও গতিশীলতা উন্নত করে, ডিএনএ রক্ষা করে।
. উৎস: সূর্যমুখী বীজ, বাদাম, জলপাই তেল, পালং শাক, পেঁপে।

. ভিটামিন সি: হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে, ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর স্বাস্থ্য উন্নত করে, গর্ভপাতের ঝুঁকি কমায়।
. উৎস: আমলকী, পেয়ারা, লেবু জাতীয় ফল, ব্রোকলি, টমেটো।

. লাইপোইক অ্যাসিড: ডিম্বাশয় ও শুক্রাণু রক্ষা করে।
. উৎস: আলু, পালং শাক, লাল মাংস।

. ভিটামিন বি৬: হরমোন নিয়ন্ত্রণ ও রক্তে শর্করার ভারসাম্য রক্ষা করে।
. উৎস: কলা, টুনা, লিভার, স্যামন, পালং শাক, ব্রোকলি।

. ভিটামিন বি১২: জরায়ুর আস্তরণ মজবুত করে, শুক্রাণু উন্নত করে, গর্ভপাতের সম্ভাবনা হ্রাস করে।
. উৎস: ঝিনুক, লিভার, মাছ, ডিম, পনির।

. ফলিক অ্যাসিড: ভ্রূণের সঠিক গঠন নিশ্চিত করে ও জন্মগত ত্রুটি রোধ করে।
. উৎস: শাকসবজি, ডাল, তিল, তিসি ও সূর্যমুখী বীজ।

. সেলেনিয়াম: ডিম্বাণু ও শুক্রাণুকে ফ্রি র‍্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে।
. উৎস: মাছ, চিংড়ি, ব্রাজিল নাট, মাশরুম, টার্কি।

. জিঙ্ক: হরমোন ভারসাম্য বজায় রেখে প্রজনন ক্ষমতা বাড়ায়।
. উৎস: কলিজা, ঝিনুক, কুমড়োর বীজ, তিল, দই।

. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: জরায়ুর রক্তপ্রবাহ বাড়ায় ও হরমোন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
. উৎস: চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্স সিড, আখরোট, সামুদ্রিক মাছ (স্যামন, সার্ডিন)।

আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাবার

. সঠিক খাদ্য পরিকল্পনায় রাখতে পারেন—
. প্রোটিন: ডিম, মাছ, ডাল, মাংস
. কার্বোহাইড্রেট: ব্রাউন রাইস, ওটস, আলু
. ফাইবার: শাকসবজি, ফল, বাদাম
. হেলদি ফ্যাট: অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, বাদামের তেল

কিছু জরুরি পরামর্শ

. খাদ্য শুধু শরীর নয়, মন ও হরমোনের ভারসাম্যও নিয়ন্ত্রণ করে।
. দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও ফল না এলে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।
. ধূমপান, অতিরিক্ত চিনি ও ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন।

সন্তান ধারণ কোনো একদিনের বিষয় নয় এটি একটি ধীর ও সচেতন প্রস্তুতির অংশ। আর সেই প্রস্তুতির ভিত্তি তৈরি হয় সঠিক খাবার থেকেই। প্রতিদিনের ছোট পরিবর্তন একদিন আপনাকে বড় সুখবর দিতে পারে।


Notice: ob_end_flush(): Failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home/somokontho/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471