ঢাকা ০৫:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘১২ লাখ টাকায় সালমান শাহ হত্যার চুক্তি’

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:৫৩:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫
  • ২১ বার পড়া হয়েছে

বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম সালমান শাহ। মাত্র ২৫ বছর বয়সে তার মৃত্যু দেশের লাখো দর্শককে শোকাহত করেছিল। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় রহস্যজনকভাবে তার লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। যেটিকে ‘অপমৃত্যু’ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে সেটি এবার নতুন মোড় নিয়েছে। দীর্ঘ ২৯ বছর পর মামলাটি রূপ নিয়েছে হত্যা মামলায়।

মামলাটি হত্যা মামলায় রূপ নেওয়ার পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে ১৯৯৭ সালে রেজভী আহমেদ ফরহাদের দেওয়া এক জবানবন্দি। যেখানে তিনি দাবি করেছিলেন, ‘আমরা সালমান শাহকে হত্যা করেছি। ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে সাজানো হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডে সামিরা ও তার পরিবারের সদস্যসহ আরও অনেকে জড়িত ছিলেন। হত্যার সময় আমিও উপস্থিত ছিলাম।’

এই জবানবন্দি অনুযায়ী, সালমান শাহর মৃত্যু ছিল ১২ লাখ টাকার চুক্তিভিত্তিক হত্যাকাণ্ড। রেজভীর দাবি, এই চুক্তি করেছিলেন সালমান শাহর শাশুড়ি লতিফা হক লুসি। এ পরিকল্পনায় ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের খলনায়ক ডন, ডেভিড, ফারুক ও জাভেদসহ আরও কয়েকজন।

১৯৯৭ সালের রেজভীর ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে উল্লেখ করা হয়, ১৯৯৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাতে গুলিস্তানের একটি বারে বসে সালমান শাহকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডন, ডেভিড, ফারুক, জাভেদ, ছাত্তার, সাজু ও রেজভী। ফারুক ২ লাখ টাকা বের করে জানান সামিরার মা এই টাকা দিয়েছেন। সালমানকে শেষ করার জন্য মোট ১২ লাখ টাকা দেবেন।

কিন্তু টাকা নিয়ে ডনের সঙ্গে ফারুকের কথাকাটাকাটি হলে পরে আরও ৪ লাখ টাকা এনে জানান, কাজের আগে ৬ লাখ, কাজের পরে ৬ লাখ দেওয়া হবে। এরপর প্লাস্টিকের দড়ি, ক্লোরোফর্ম, রিভলবার ও সিরিঞ্জসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রস্তুত করা হয়।

রেজভী জানান, সেই রাতেই ৫ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটায় সালমান শাহর ইস্কাটনের বাসায় যান ডন, ডেভিড, ফারুক ও আজিজ মোহাম্মদ ভাই। ঘটনাস্থলে ছিলেন সালমানের স্ত্রী সামিরা, শাশুড়ি লতিফা হক লুসি এবং আত্মীয়া রুবি। ঘুমন্ত সালমানকে ক্লোরোফর্ম দিয়ে অচেতন করা হয়। কিছুক্ষণ পর তার জ্ঞান ফিরলে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। এক পর্যায়ে আজিজ ইনজেকশন পুশ করার নির্দেশ দেন।

রেজভীর দাবি, এরপর ইনজেকশন পুশ করে সালমানকে হত্যা করা হয় এবং ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে সাজাতে সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় তার মরদেহ।

সালমান শাহ হত্যা মামলায় সর্বমোট ১১ জনকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। হত্যা মামলায় প্রধান আসামি নায়কের সাবেক স্ত্রী সামিরা হক। অন্য ১০ আসামি হলেন প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, খলনায়ক ডন, নায়কের সাবেক শাশুড়ি লতিফা হক লুসি, ডেভিড, জাভেদ, ফারুক, মেফিয়ার বিউটি সেন্টারের রুবি, আবদুস সাত্তার, সাজু ও রেজভি আহমেদ ফরহাদ।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।

ভোট হলে জামায়াতের অস্তিত্ব থাকবে না : মির্জা ফখরুল

‘১২ লাখ টাকায় সালমান শাহ হত্যার চুক্তি’

আপডেট সময় ০৯:৫৩:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম সালমান শাহ। মাত্র ২৫ বছর বয়সে তার মৃত্যু দেশের লাখো দর্শককে শোকাহত করেছিল। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় রহস্যজনকভাবে তার লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। যেটিকে ‘অপমৃত্যু’ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে সেটি এবার নতুন মোড় নিয়েছে। দীর্ঘ ২৯ বছর পর মামলাটি রূপ নিয়েছে হত্যা মামলায়।

মামলাটি হত্যা মামলায় রূপ নেওয়ার পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে ১৯৯৭ সালে রেজভী আহমেদ ফরহাদের দেওয়া এক জবানবন্দি। যেখানে তিনি দাবি করেছিলেন, ‘আমরা সালমান শাহকে হত্যা করেছি। ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে সাজানো হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডে সামিরা ও তার পরিবারের সদস্যসহ আরও অনেকে জড়িত ছিলেন। হত্যার সময় আমিও উপস্থিত ছিলাম।’

এই জবানবন্দি অনুযায়ী, সালমান শাহর মৃত্যু ছিল ১২ লাখ টাকার চুক্তিভিত্তিক হত্যাকাণ্ড। রেজভীর দাবি, এই চুক্তি করেছিলেন সালমান শাহর শাশুড়ি লতিফা হক লুসি। এ পরিকল্পনায় ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের খলনায়ক ডন, ডেভিড, ফারুক ও জাভেদসহ আরও কয়েকজন।

১৯৯৭ সালের রেজভীর ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে উল্লেখ করা হয়, ১৯৯৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাতে গুলিস্তানের একটি বারে বসে সালমান শাহকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডন, ডেভিড, ফারুক, জাভেদ, ছাত্তার, সাজু ও রেজভী। ফারুক ২ লাখ টাকা বের করে জানান সামিরার মা এই টাকা দিয়েছেন। সালমানকে শেষ করার জন্য মোট ১২ লাখ টাকা দেবেন।

কিন্তু টাকা নিয়ে ডনের সঙ্গে ফারুকের কথাকাটাকাটি হলে পরে আরও ৪ লাখ টাকা এনে জানান, কাজের আগে ৬ লাখ, কাজের পরে ৬ লাখ দেওয়া হবে। এরপর প্লাস্টিকের দড়ি, ক্লোরোফর্ম, রিভলবার ও সিরিঞ্জসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রস্তুত করা হয়।

রেজভী জানান, সেই রাতেই ৫ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটায় সালমান শাহর ইস্কাটনের বাসায় যান ডন, ডেভিড, ফারুক ও আজিজ মোহাম্মদ ভাই। ঘটনাস্থলে ছিলেন সালমানের স্ত্রী সামিরা, শাশুড়ি লতিফা হক লুসি এবং আত্মীয়া রুবি। ঘুমন্ত সালমানকে ক্লোরোফর্ম দিয়ে অচেতন করা হয়। কিছুক্ষণ পর তার জ্ঞান ফিরলে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। এক পর্যায়ে আজিজ ইনজেকশন পুশ করার নির্দেশ দেন।

রেজভীর দাবি, এরপর ইনজেকশন পুশ করে সালমানকে হত্যা করা হয় এবং ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে সাজাতে সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় তার মরদেহ।

সালমান শাহ হত্যা মামলায় সর্বমোট ১১ জনকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। হত্যা মামলায় প্রধান আসামি নায়কের সাবেক স্ত্রী সামিরা হক। অন্য ১০ আসামি হলেন প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, খলনায়ক ডন, নায়কের সাবেক শাশুড়ি লতিফা হক লুসি, ডেভিড, জাভেদ, ফারুক, মেফিয়ার বিউটি সেন্টারের রুবি, আবদুস সাত্তার, সাজু ও রেজভি আহমেদ ফরহাদ।


Notice: ob_end_flush(): Failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home/somokontho/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471