সুন্দরবনের কেওড়া গাছের ফল দিয়েই এখন তৈরি ইচ্ছে সুস্বাদু হরেক রকম চাটনি, জেলি ও আচার। যা অত্যান্ত সুস্বাদু। কেওড়া ফলের নাম শুনলেই ভোজন রসিক যে কারো জিভে জল চলে আসবে। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ কেওড়ার ফল দিয়ে রান্না কেওড়ার টক ডাল বেশ জনপ্রিয়। যেটি সুস্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারি।
এবার এই কেওড়া ফলদিয়ে জেলি, চাটনি ও আচার তৈরি করে বেশ স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের জনপদ সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নিলডুমুর উপকুলের আচারের উদ্যোক্তা শেফালি বিবি। তিনি পুষ্টি ও নানা ঔষধি গুণ সমৃদ্ধ এই আচার ও চাটনি তৈরি করে এলাকায় বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছেন।
নানা ঔষধি গুণ সমৃদ্ধ কেওড়া ফলের জন্মস্থান সুন্দরবন। আর এই সুন্দরবন থেকে কেওড়া ফল সংগ্রহ করে তা দিয়ে শেফালি বেগম হরেক রকম জেলি, চাচনি ও আচার তৈরি করে বাজারজাত করে থাকেন। কাচের বইমে ভর্তি করে প্রতি কেজি তিনি আচার ও চাচনি বিক্রি করে থাকেন ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।
বর্তমানে উপকূলীয় নদীর তীরে প্রাকৃতিভাবে গড়ে উঠেছে অনেক কেওড়া বাগান। বাজারে কেওড়ার ব্যাপক চাহিদা থাকায় এসব বাগানের কেওড়া বাজারজাত করছেন স্থানীয়রা।
সুন্দরবন এবং এর পাশ্বর্বতী এলাকার মানুষের কাছে কেওড়া ফল ও কেওড়ার ডাল(টকডাল) বেশ জনপ্রিয়। অনেকেই কেওড়ার আচার বা চাটনি তৈরি করে শেফালি বেগমের মতো অনেকে স্বাবলম্বীও হয়েছেন। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ কেওড়ার বাজারে চাহিদা থাকলেও বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের সুযোগ না থাকায় অন্যান্য অঞ্চলের মানুষ কেওড়ার স্বাদ থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকেন। কেওড়ার আচার তৈরি করতে প্রথমে গাছ থেকে কেওড়া ফল সংগ্রহ করে তা থেকে মুখ ফেলানোর পরে ধুয়ে সিদ্ধ করতে হয়। পরে ঠন্ডা হয়ে গেলে আটির গা থেকে আশ ছাড়ানোর পর শ্বাসগুলো চটকিয়ে গরম শরিষার তেলে দিয়ে ৩ ঘণ্টা জ্বালানো হয় এবং নাড়তে হয়। এর পরেই তৈরি হয় পুষ্টি ও ঔষাধি গুণ সমৃদ্ধ সুস্বাধু আচার। তবে এখন সাতক্ষীরা শ্যামনগরের উপকূলের তৈরি কেওড়ার চাচনি ও আচার দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ ও বাজারজাত করা হচ্ছে।
কেওড়া গাছ ও ফলের অনকে ঔষধি গুণ রয়েছে। ফাল্গুন মাসের শেষে ফুল হয়। ফ্লাগুনে ফুল আসে আর চৈত্র-বৈশাখে ফল ধরে এবং আষাঢ়-শ্রাবণ ও ভাদ্র-আশ্বিন মাস পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। কেওড়া ফল কিছুটা আমলকির মতো দেখতে। কেওড়া ফলে আছে প্রচুর ভিটামনি ‘সি। যা মানবদেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। কেওড়া ফল রক্তে কোলস্টোরেল ও শরীরে চর্বি কমায় এবং শরীরে হজমশক্তি বৃদ্বির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও প্রচুর। যা পাকস্থলীর অ্যাসিডিটি কমায়।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. কাজী আরিফ আহমেদ বলেন, কেওড়া ফল ভিটামিন সি’র অভাব পূরণ করার পাশাপাশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। খাবার হজমের ক্ষেত্রে কেওড়া ভূমিকা রাখে।
নিজস্ব সংবাদ : 




















